![]() |
ছবি: সংগৃহীত |
টাঙ্গাইলের সরকারি কুমুদিনী কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রধান শম্পা শারমিন খান জানাচ্ছেন, ডিম যত বেশি সময় চুলায় থাকবে, তার পুষ্টিগুণ ততই কমতে থাকবে। বিশেষ করে আমিষের গড়ন বদলে যাওয়ার কারণে তা শরীরে ভালোভাবে শোষিত হয় না। তাই অল্প সময়ে, অল্প তাপে রান্না করা ডিমই সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর।
চলুন জেনে নেওয়া যাক ডিমের কোন পদে কতটা পুষ্টি থাকে এবং কোন ধরনের প্রস্তুতি সবচেয়ে ভালো
✅ সেদ্ধ ডিম: সবচেয়ে নিরাপদ, সবচেয়ে পুষ্টিকর
সরাসরি পানিতে সেদ্ধ করলে ডিমের পুষ্টিগুণ ঠিকঠাক থাকে। এতে তেলের ব্যবহার নেই বলে বাড়তি ক্যালরির ভয়ও নেই। সহজপাচ্য ও ঝুঁকিমুক্ত হওয়ায় এটি সব বয়সীদের জন্য উপযোগী।
✅ পানি পোচ: নরম গঠনে পুষ্টি অটুট
ডিমের সাদা অংশ তুলনামূলক নরম থাকে এবং তেল ছাড়াই প্রস্তুত হয় বলে পুষ্টিগুণ ঠিক থাকে। গ্যাসে রান্না করে অল্প সময়েই তৈরি করা যায়।
⚠️ তেলে পোচ: স্বাদে ভালো, পুষ্টিতে কিছুটা কম
তেলে পোচ করা ডিম খেতে সুস্বাদু হলেও অতিরিক্ত তাপে সাদা অংশ শক্ত হয়ে যায়, যা ডিমের আমিষের গঠনকে প্রভাবিত করে। তবে মাঝেমাঝে খাওয়া ক্ষতিকর নয়, যদি তেলের ব্যবহার সীমিত থাকে।
⚠️ অমলেট: মাঝামাঝি
অমলেট তৈরিতে ডিম অনেকটা সময় তাপে থাকে। এতে কিছুটা পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। তবে সবজিসমৃদ্ধ অমলেট তুলনামূলক স্বাস্থ্যকর হতে পারে।
❗ রান্না করা অন্যান্য পদ: সাবধান
ডিম দিয়ে তৈরি পুডিং বা অন্য রান্নায় পুষ্টিগুণের কিছুটা ক্ষয় হয়, বিশেষ করে যদি অতিরিক্ত তাপে বা দীর্ঘ সময় রান্না করা হয়। এসব খাবার আবার গরম করাও উচিত নয়, কারণ এতে পুষ্টি আরও কমে যায়।
✅ মাইক্রোওয়েভ: নির্ভরযোগ্য, যদি ঠিকভাবে রান্না হয়
মাইক্রোওয়েভে ডিম রান্না করলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। অল্প পানি বা তেল ব্যবহার করে দ্রুত রান্না করলে পুষ্টিগুণ ঠিকঠাক থাকে।
❌ কাঁচা ডিম: বিপজ্জনক অভ্যাস
অনেকে মনে করেন, পেশি গঠনের জন্য কাঁচা ডিম খাওয়া উপকারী। কিন্তু বাস্তবতা হলো, কাঁচা ডিম থেকে শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি শোষণ করতে পারে না। এতে সালমোনেলা সংক্রমণের ঝুঁকিও থাকে। এ ছাড়া বায়োটিন শোষণে ব্যাঘাত ঘটে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
🟡 কুসুম খাবেন কি খাবেন না?
যদি চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদ নির্দিষ্টভাবে নিষেধ না করেন, তবে অবশ্যই কুসুমসহ ডিম খাবেন। কারণ, কুসুমেই থাকে ডিমের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান।
✳️ কিছু বাড়তি সতর্কতা
-
ডিমের পদ বেশি তাপে বা বেশি সময় রান্না করবেন না।
-
তেল ব্যবহারের ক্ষেত্রে সম্ভব হলে একবার ব্যবহৃত তেল পুনরায় ব্যবহার করবেন না।
-
পুষ্টিগুণ ঠিক রাখতে রান্না করার সঙ্গে সঙ্গেই খাবারটি গ্রহণ করুন।