“আমরা এখানেই মরব” — গাজার বাসিন্দাদের শেষ সিদ্ধান্ত

ছবি: সংগৃহীত

গাজার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত আটবার পরিবারসহ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আহমেদ হির্জ। তবুও তার সিদ্ধান্ত দৃঢ় — আর কোথাও যাবেন না। আল জাজিরাকে তিনি বলেন,

“আমি স্রষ্টার নামে শপথ করছি, আমি ১০০ বার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি। তাই আমার জন্য এখানেই মৃত্যুবরণ করা ভালো।”

তার মতো অনেক বাসিন্দাই একই অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন। রজব খাদের বলেন, “আমরা গাজা ছাড়ব না। ইসরায়েলিরা আমাদের দেহ ও আত্মা ছাড়া কিছুই পাবে না।”

উত্তর-পূর্ব বেইত হানুন থেকে বাস্তুচ্যুত মাঘজুজা সাদা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “দক্ষিণ নিরাপদ নয়। গাজা শহর নিরাপদ নয়। উত্তরও নিরাপদ নয়। আমরা কোথায় যাব? সমুদ্রে ঝাঁপ দেব নাকি?”

ভয় ও অনিশ্চয়তার ছায়া
আল জাজিরার প্রতিবেদক হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, ইসরায়েলের জাতিগত নির্মূল পরিকল্পনা নিয়ে গাজা শহরে ভোর থেকেই আতঙ্ক বিরাজ করছে। কেউ কেউ জিনিসপত্র গুছিয়ে নিচ্ছেন, যদিও তারা জানেন না কোথায় যেতে হবে।

ফিলিস্তিনি এনজিও নেটওয়ার্কের পরিচালক আমজাদ শাওয়া বলেন, বারবার বাস্তুচ্যুত হতে হতে মানুষ ক্লান্ত। হাসপাতাল, পানি, অবকাঠামো — সব ধ্বংস হয়ে গেছে। দেওয়ার মতো কিছুই নেই।

এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েলি বাহিনী ক্ষুধায় কাতর মানুষদের উপর হামলা অব্যাহত রেখেছে। শনিবার ভোরে কমপক্ষে ৩৬ জন নিহত হয়েছেন, এর মধ্যে অন্তত ২১ জন সাহায্যের আশায় ত্রাণকেন্দ্রে ছিলেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ছাড়িয়েছে এবং আহত ১ লাখ ৫০ হাজারের বেশি।

২০২৩ সাল থেকে যুদ্ধবিরতির আন্তর্জাতিক আহ্বান উপেক্ষা করে ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। অবিরাম বোমাবর্ষণে এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, খাদ্য সংকট চরমে পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইতিমধ্যে নেতানিয়াহু ও প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post