![]() |
ছবি: সংগৃহীত |
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত ইসরায়েলের তথ্যভান্ডারে ৮ হাজার ৯০০ জন হামাস ও ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) যোদ্ধার নিহত হওয়ার তথ্য রয়েছে। অথচ সেই সময় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ছিল প্রায় ৫৩ হাজার। অর্থাৎ নিহতদের মাত্র ১৭ শতাংশ যোদ্ধা এবং বাকি ৮৩ শতাংশই ছিলেন সাধারণ বেসামরিক মানুষ।
অনুসন্ধান প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেককে যাচাই না করেই ‘সন্ত্রাসী’ বা ‘যোদ্ধা’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এমনকি স্থানীয় পুলিশ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা কিংবা হামাসের সঙ্গে সরাসরি কোনো সম্পর্ক না থাকা ফিলিস্তিনিদেরও যোদ্ধা হিসেবে দেখানো হয়েছে। এর ফলে বেসামরিক হতাহতের প্রকৃত হার আরও বেশি হতে পারে।
এ ছাড়া গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া হাজারো মৃতদেহ সরকারি হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। তাই গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যে ৮৩ শতাংশ হতাহতের হিসাব দিয়েছে, বাস্তবে তা আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একজন ইসরায়েলি গোয়েন্দা সদস্য স্বীকার করেছেন, নিহতদের নিয়ে রিপোর্টগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয় যেন মনে হয় হামাসের দ্বিগুণ যোদ্ধা নিহত হয়েছে।
আধুনিককালের যুদ্ধে এভাবে বিপুলসংখ্যক বেসামরিক প্রাণহানি বিরল ঘটনা। এমনকি সিরিয়া ও সুদানের দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধেও এ হার এত বেশি ছিল না। দ্য গার্ডিয়ানের গবেষণায় দেখা গেছে, স্রেব্রেনিৎসা গণহত্যা, রুয়ান্ডার গণহত্যা ও ইউক্রেনের মারিউপোল অবরোধ ছাড়া সাম্প্রতিক ইতিহাসে আর কোনো সংঘাতে এত বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়নি।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ ফ্রান্সেসকা আলবানিজ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং ইসরায়েলের নিজস্ব মানবাধিকার সংগঠন বেতসেলেম ইতিমধ্যেই গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। গত মাসে গণহত্যা বিষয়ক খ্যাতনামা অধ্যাপক ওমর বার্তভ গাজার পরিস্থিতিকে ‘অবশ্যম্ভাবী গণহত্যা’ হিসেবে উল্লেখ করেন। একই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন আরও বহু আন্তর্জাতিক গবেষক ও বিশেষজ্ঞ।