সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে চলছে অবাধ পাথর লুট, নিরাপত্তা বাহিনী অচল

ছবি: এপি

গেল বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে বিরামহীনভাবে চলছে পাথর লুট। সিলেটের অন্যতম জনপ্রিয় এই দর্শনীয় স্থানটি বর্তমানে লুটপাটের ফলে ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়েছে। শুধু পাথরই নয়, বালুও ব্যাপকভাবে লুট হচ্ছে। অথচ এই অঞ্চলে নিরাপত্তার জন্য রয়েছে বিজিবির চারটি ক্যাম্প ও পোস্ট।

পরিবেশকর্মী ও স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত এখানে চোখ যেতেই দেখা যেত সাদা সাদা পাথরের বিশাল সমুদ্র। কিন্তু এখন সেখানে ধু-ধু বালুচর সৃষ্টি হয়েছে। তারা জানান, মাত্র এক বছরে প্রায় এক কোটি ৫০ লাখ ঘনফুট পাথর লুট হয়ে গেছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য দুইশত কোটি টাকারও বেশি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ধলাই নদীর উৎসমুখ থেকে শত শত নৌকা দিয়ে পাথর লুট হচ্ছে। পর্যটনকেন্দ্রের মূল এলাকায় বড় বড় পাথরগুলো পুরোপুরি শেষ হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও বালুচর জেগে উঠেছে এবং বিভিন্ন স্থানে খোঁড়াখুঁড়ির চিহ্ন স্পষ্ট। বড় পাথরের পাশাপাশি ছোট পাথরগুলোও দ্রুত লুট হয়ে যাচ্ছে। দিবালোকে পাথর লুটপাট চলছে প্রকাশ্যে, অথচ দায়িত্বশীলরা শুধু তা দেখেই থাকেন।

তবে এই ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশেও পর্যটকবাহী নৌকাগুলো চলাচল করছে, যা পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। তারা হতাশা প্রকাশ করেছেন।

পর্যটনকেন্দ্রের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রশাসনের উদাসীনতা ও টিলেঢালা নজরদারির কারণে পাথর চোরাকারবারিরা নির্বিঘ্নে তাদের লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে ছোট ছোট অভিযান চালানো হলেও সেগুলোর প্রভাব সাময়িক। এর পর আবারও লুটপাট অব্যাহত থাকে। এমনকি স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনান বলেন, এই কেন্দ্রকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত ১৫টি মামলা হয়েছে এবং প্রায় ৭০ জন আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে সাদাপাথরের সম্পূর্ণ লুটপাট বন্ধ করতে বড় ধরনের ও স্থায়ী অভিযান পরিচালনার প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post