সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের মরদেহ মেঘনা নদীতে উদ্ধার

ছবি: সংগৃহীত

নিখোঁজ থাকা প্রবীণ সাংবাদিক ও কলাম লেখক বিভুরঞ্জন সরকারের মরদেহ মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীতে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, মেঘনা নদী থেকে উদ্ধার হওয়া মরদেহ বিভুরঞ্জনের বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান।

বিভুরঞ্জন সরকারের ছোট ভাই চিররঞ্জন সরকার জানান, পুলিশ যে ছবি দেখিয়েছে, তা দেখে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন মরদেহ তার দাদারই। “আমরা এখন ঘটনাস্থলে যাচ্ছি, কিছু ফরমালিটিজ সম্পন্ন করতে হবে,” বলেন তিনি।

রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম ফারুক জানান, উদ্ধারকৃত মরদেহের পরিবর্তন হয়ে গেছে, তাই চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে পরিবারের সদস্যরা শনাক্ত করতে যাচ্ছেন। মরদেহটি মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

এর আগে ২১ আগস্ট সকাল সোয়া ৯টায় বিভুরঞ্জন সরকার একটি লেখা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে মেইল করেন। সেখানে ফুটনোটে লিখেছিলেন: “জীবনের শেষ লেখা হিসেবে এটা ছাপতে পারেন।”
এর কিছুক্ষণ পর, সকাল ১০টার দিকে অফিসে যাওয়ার কথা বলে তিনি বাসা থেকে বের হন এবং আর ফেরেননি। ওইদিন রাতেই তার পরিবার থানায় জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করে।

সাংবাদিকতার দীর্ঘ পথচলা

  • বিভুরঞ্জন সরকার অল্প বয়সেই সাংবাদিকতায় যুক্ত হন।
  • প্রথমে তিনি দৈনিক আজাদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ শুরু করেন।
  • পরবর্তীতে সাপ্তাহিক একতা, দৈনিক রূপালী, সাপ্তাহিক চলতিপত্র, সাপ্তাহিক মৃদুভাষণ এবং দৈনিক মাতৃভূমি-তে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
  • আশির দশকে সাপ্তাহিক যায়যায়দিন-এর সহকারী সম্পাদক থাকাকালে তিনি ‘তারিখ ইব্রাহিম’ ছদ্মনামে কলাম লিখে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান।
  • সর্বশেষ তিনি দৈনিক আজকের পত্রিকা-এর জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সঙ্গে যুক্ত হন। তবে সাংবাদিকতার কারণে তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন না।

Post a Comment

Previous Post Next Post